যশোর কেশবপুরের কৃতিসন্তান হলেন ছাত্রদলের সভাপতি। বাবা আওয়ামী লীগের উপজেলা কমিটির সহ সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান। বাকি ভাইরা ক্ষমতাসীন দলের অন্যান্য সংগঠনের সঙ্গে জড়িত।
তবে স্রোতের বাইরে কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ। তিনি করেন ছাত্রদল। এজন্য ছাড়তে হয়েছে পরিবার-স্বজনদের। দীর্ঘদিন পরিবারচ্যুত এই নেতার ওপরেই ভরসা করেছে বিএনপি নেতৃত্ব। এজন্যে এবার সংগঠনের শীর্ষ নেতৃত্বের দায়িত্ব পেলেন ঢাবির এই শিক্ষার্থী।
রোববার (১৭ এপ্রিল) বিকেলে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের পাঁচ সদস্যের আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়। এতে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন কাজী রওনাকুল ইসলাম শ্রাবণ ও সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন সাইফ মাহমুদ জুয়েল।
সভাপতি হওয়ার আগে পরিবার ছাড়তে হয়েছে কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণকে। রাজনীতি চালিয়ে যেতেও সবচেয়ে বড় বাঁধা ছিল পরিবার থেকেই।
জানা যায়, শ্রাবণ ছাত্রদল করায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর থেকেই তার সঙ্গে সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করেন বাবা রফিকুল ইসলাম।এমনকি ২০১৯-এর ৩০ সেপ্টেম্বর এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি ঘোষণা দেন, আমি ও আমার পরিবারের সবাই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। শুধু ছোট ছেলে রওনকুল বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। কাজী রওনকুল আমার সন্তান হলেও রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে আমাদের পরিবারের কারও সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক নেই। কোনো যোগাযোগ নেই। নিজের আয়ে সে চলে। পারিবারিক বিয়ে বা কোনো অনুষ্ঠানাদিতেও আসে না।
আমরাও তার কাছে যাই না। লিখিত বক্তব্যে কাজী রফিকুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে আমি জেলা আওয়ামী লীগের মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক, কেশবপুর উপজেলার নির্বাচিত চেয়ারম্যান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক। আমার পাঁচ ছেলে ও এক কন্যাসন্তান সবাই সাবালক-সাবালিকা। আমার জ্যেষ্ঠ পুত্র কাজী মুস্তাফিজুল ইসলাম মুক্তা আ.লীগের মনোনয়নপ্রাপ্ত হয়ে নৌকা মার্কায় সাগরদাঁড়ি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত চেয়ারম্যান এবং কেশবপুর উপজেলা আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। দ্বিতীয় ছেলে কাজী মুজাহিদুল ইসলাম পান্না কেশবপুর উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি। তৃতীয় ছেলে কাজী মাযাহারুল ইসলাম সোনা যশোর জেলা মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্ম লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক। চতুর্থ ছেলে কাজী আযহারুল ইসলাম মানিক কেশবপুর উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক।কাজী রফিকুল ইসলাম বলেন, আমার কনিষ্ঠ ছেলে কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০০৩ সালে ভর্তি হয়। তখন সে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর থেকে ছাত্রদলের সংগঠনে জড়িয়ে পড়ে। সেই থেকে বাড়ির সঙ্গে তার যোগাযোগ কমে আসে।
তিনি বলেন, বারবার আমি এবং আমার পরিবারের সবাই অনেক চেষ্টা করেও ছাত্রদল ও ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে তার সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করাতে ব্যর্থ হয়েছি। এজন্য আমার পরিবারের সদস্যরা তার সঙ্গে সব যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করি। সেও আমাদের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ রাখে না।এদিকে, শ্রাবণের বাবার সংবাদ সম্মেলনে পর রাজনৈতিক অঙ্গনে এ নিয়ে আলোচনা শুরু হয়।
শ্রাবণ আরো লাইমলাইটে চলে আসেন। ২০১৯ এর ১৯ সেপ্টেম্বর ছাত্রদলের কাউন্সিলে সভাপতি প্রার্থী হয়ে ৮ ভোটে হেরে যান তিনি।অবশেষে ৩ বছর পর এবার দলই তাকে দায়িত্বে নিয়ে আসলো
।এ বিষয়ে কাজী রওনকুল ইসলাম বলেন, ‘আমি কেশবপুর কলেজে উচ্চ মাধ্যমিকে পড়ার সময় থেকেই জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। রাজনৈতিক আদর্শের কারণে আমি আমার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখি না।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।